ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ইসরায়েলি হামলায় নিন্দার ঝড় ইসরায়েলের হামলায় ছিন্নভিন্ন ইরান ৬ পরমাণু বিজ্ঞানীসহ নিহত ৭৮ কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ ভিড় বাস-ট্রেন-লঞ্চে প্রাথমিক শিক্ষার স্তরে বড় পরিবর্তন নির্বাচনের ট্রেনে বাংলাদেশ তাপপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা গরমে হাঁসফাঁস খিলগাঁওয়ে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার দেশে ফিরেছেন ১২ হাজার ৮৭৭ হাজি, মৃত্যু ২৬ জনের রাজধানীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত ২ বান্দরবান ঝিরিতে ভেসে যাওয়া ৩ পর্যটকের দ্বিতীয় জনের লাশ উদ্ধার কৃষিগুচ্ছের চতুর্থ ধাপের চূড়ান্ত ভর্তি ১৮ জুন নিজ এলাকায় অবরুদ্ধ নুর, সেনাবাহিনী যাওয়ার পর ফিরলেন কমলাপুরে মাইকিং করেও মাস্ক পরানো যাচ্ছে না বন্ধ হওয়ার দুদিন পর দর্শনার্থীদের জন্য আবারও উন্মুক্ত রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি ঢাকায় সংগ্রহ হয়েছে ৭৫ হাজার চামড়া ‘আওয়ামী দোসর নয়, কর্মজীবী নারীর স্বীকৃতি চাই’ টিকা থেকে বঞ্চিত দেশের বিপুল সংখ্যক শিশু ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা বরগুনায় ডেঙ্গুতে দু’জনের মৃত্যু উত্তরায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে হত্যা মামলার আসামি মার্জিয়া

৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা

  • আপলোড সময় : ১৩-০৬-২০২৫ ০৬:৩২:১২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৩-০৬-২০২৫ ০৬:৩২:১২ অপরাহ্ন
৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা
টেকনাফ উপকূলীয় শাহপরীর দ্বীপ নৌকার ঘাটে যেতেই চোখে পড়ল জেলেদের কর্মব্যস্ততা। কেউ মাছ ধরার ট্রলারে রঙ লেপটে নিচ্ছেন, কেউ জাল প্রস্তুত করছেন। কেউ আবার বরফ কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে তুলছেন। সমুদ্র যাত্রায় শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য প্রজনন মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে সাগরে মাছ ধরায়ে ৫৮ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা গত বুধবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। তাই জেলেদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল থেকে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। এই সময়ের মধ্যে টেকনাফের জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন। নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতি জেলের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ৫৮ দিন পর দক্ষিণাঞ্চলের টেকনাফ উপকূলের বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলে পল্লীগুলোতে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। বরফ কলগুলোতেও বরফ তৈরির প্রস্তুতি ও বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন সাগরে জাল ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের জেলে আবুবকর ছিদ্দিক বলেন, ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তিনি সরকারি সহায়তা হিসেবে ৫৮ কেজি চাল পেয়েছেন। কিন্তু আট সদস্যের পরিবারের জন্য এই চাল যথেষ্ট ছিল না। ফলে তাকে ধার করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার জেলেরা অনেক খুশি। তিনি বলেন, তার নৌকায় তিনি ছাড়াও আরও ৯ জেলে আছেন। এদের মধ্যে তিন জন জেলে সরকারি চাল পান নাই। জেলে আলী আজগর মাঝি বলছিলেন, “দীর্ঘ ৫৮ দিন একেবারে বেকার ছিলাম। কিছু টাকা ঋণগ্রস্ত হয়েছি। তবে সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়ার কারণে আশা করছি এ বছর ভাল পরিমাণে মাছ পাব।” তিনি বলেন, “১৫ দিন আগেই জাল ও ট্রলার মেরামত শেষ করেছি। মৎস্য উপকরণও বোঝাই করেছি। নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকার বিশেষ প্রণোদনার চাল দিলেও তাতে আমাদের সংসার চলছে না। জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার।” শাহপরীর দ্বীপ ট্রলার মালিক সভাপতি গফুর আলম বলছেন, “৫৮ দিন অবরোধের কারণে কষ্টে জীবনযাপন করা জেলেদের মুখে এখন হাসি ফুটেছে। শাহ পরীর দ্বীপ উপকূলের প্রায় ৫ শতাধিক ট্রলার সাগরে মাছ শিকার জন্য যাত্রা শুরু করেছে। “এলাকার মৎস্য মাছের আড়ত গুলোয় নতুন করে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। জেলে পল্লীগুলোও কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে।” ভারতের সঙ্গে মিল রেখে এবার সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় ঠিক করেছিল সরকার। ফলে এ বছর প্রচুর ইলিশ মিলবে বলে প্রত্যাশা জেলেদের। সাধারণত প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ ধরা বন্ধ থাকে। তবে ভারতে প্রতিবছর মাছ ধরা বন্ধ থাকে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৬১ দিন। আর মিয়ানমারে নিষেধাজ্ঞার এই সময় ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ৯১ দিন। বাংলাদেশের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রাখেন, তখন প্রতিবেশী দেশের জেলেরা এদেশের জলসীমায় ঢ়ুকে মাছ ধরে থাকেন। এই কারণে মৎস্যজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞার সময় সমন্বয়ের দাবি করে আসছিলেন। টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সাগরে নিষেধাজ্ঞার ফলে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ সুষ্ঠুভাবে প্রজনন করতে পেরেছে বলে আমরা আশা করছি। নিষেধাজ্ঞার চলাকালীন জেলেদের প্রণোদনার চাল সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” টেকনাফ উপজেলায় ১০ হাজার ৭৭৩ জন জেলেকে ৫৮ কেজি করে ৬ লাখ ২৫ হাজার কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “মূলত দুটি কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রথমত, মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। দ্বিতীয়ত, ছোট মাছকে বড় হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এবারের নিষেধাজ্ঞা ফলপ্রসূ হয়েছে। এ বছর সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।”
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য